দেশের খবর,প্রযুক্তি।। মহাবিশ্বের রহস্য অনুসন্ধান করতে মহাকাশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে এখন পর্যন্ত নির্মিত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও আধুনিক স্পেস টেলিস্কোপ (মহাকাশ দূরবীক্ষণ যন্ত্র)।
জেমস ওয়েব নামে এক মহাশূন্য টেলিস্কোপটি শনিবার গ্রেনিচ মান সময় দুপুর ১২টা বেজে ২০ মিনিটে (স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাতটা ২০ মিনিটে) ফ্রেঞ্চ গায়ানার কোউরু মহাকাশ কেন্দ্র থেকে যাত্রা শুরু করে।
প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার খরচ করে বানানো এই টেলিস্কোপটি রকেটসহ উৎক্ষেপণের পর ২৬ মিনিট ধরে মহাকাশ অভিমুখে যাত্রা করবে। এরপর রকেট থেকে আলাদা হয়ে নিজের যাত্রা শুরু করবে এটি।
টেলিস্কোপটি মহাবিশ্বকে ইনফ্রারেড বা অবলোহিত আলোয় অবলোকন করবে। এর মূল আয়নাটি স্বর্ণ দিয়ে মোড়ানো বেরিলিয়াম ধাতুর ১৮টি ষড়ভুজ আকৃতির আয়না জোড়া লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ফলে হাবলের তুলনায় অনেক দূরের আলো ও বস্তু দেখতে পারবে এটি।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের মূল দুটি বৈজ্ঞানিক লক্ষ্য হলো ছায়াপথের জন্ম ও বিবর্তন এবং নক্ষত্র ও গ্রহের সৃষ্টি কীভাবে হলো, তা খুঁজে বের করতে সহযোগিতা করা।
এ ছাড়া দূরবর্তী গ্রহের বায়ুমণ্ডলও পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হবে এই টেলিস্কোপ। ফলে অন্য গ্রহে প্রাণের সন্ধান এবং সেই গ্রহ মানব বসবাসের উপযোগী কি না, তাও জানা যাবে।
মহাকাশ নিয়ে বিভিন্ন গবেষণার দ্বারও উন্মোচন করবে জেমস ওয়েব। এর সাহায্যে পৃথিবী থেকে সবচেয়ে বেশি দূরে মহাবিশ্বে বিরাজমান বস্তু ও সংঘটিত ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।
যেমন- এর দ্বারা ধারণকৃত অবলোহিত বিকিরণ (ইনফ্রারেড রে) চিত্রণের মাধ্যমে আজ থেকে ১ হাজার ৩৫০ কোটি বছরেরও আগে মহাবিশ্বের প্রথম আদি নক্ষত্রগুলো কীভাবে রূপ লাভ করেছিল তা জানা যাবে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, এতো বড় আয়না থাকার ফলে টেলিস্কোপটি বিগ ব্যাংয়ের মাত্র একশ’ মিলিয়ন বছর পরের অবস্থার চিত্রধারণ করতে পারবে। যেখানে হাবল ধারণ করতে পারত বিগ ব্যাংয়ের চারশ’ মিলিয়ন বছর পরের চিত্র।
এছাড়াও ইনফ্রারেড আলো ব্যবহারের ফলে আগের চেয়ে বহুগুণ পরিষ্কার হবে ওয়েবের তোলা ছবি। ফলে মহাবিশ্বের একদম শুরুর দিকে যেসব নক্ষত্র গঠিত হয়েছিলো তাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার আশা করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
ডিখ/প্রিন্স