দেশের খবর চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত জাদুঘর খুনি জিয়ার নামে কিছুতেই হতে পারেনা বলে মন্তব্য করে এটির নাম সংশোধন করে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি’ জাদুঘর নামকরণের জন্য সরকার ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়কে জানানো হয়েছে বললেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
তিনি বলেছেন, বিএনপি-জামাত জোট যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাঁগ্রস্ত করতে গিয়ে সরকারের কঠিন হস্তক্ষেপের কারণে ব্যর্থ হয়েছে। এসব ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে।
নওফেল বলেন, আজ জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ সঠিক পথে এগুচ্ছে। সরকারের বলিষ্ট ভূমিকার কারণে মানুষের গড় আয়ু ও মাথাপিঁছু আয় বেড়েছে। পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল নির্মানসহ বড়-ছোট প্রত্যেক প্রকল্পের কাজ এখন দৃশ্যনীয়।
আজ (২৮ মে) শুক্রবার বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ড কর্তৃক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে করোনাকালীন (কোভিড-১৯) স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে পালস অক্সিমিটার বিতরণ করা হয়।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক রাসেল ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ সরওয়ার আলম চৌধুরী মনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা পর্ব শেষে ২শ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে অক্সিমিটার বিতরণ করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি।
বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ‘ইকো’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও দৈনিক পূর্বদেশ’র সৌজন্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে এসব অক্সিমিটার বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূইঁয়া, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা ও চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া।
বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির আহবায়ক সাহেদ মুরাদ সাকু ও সদস্য সচিব কাজী মুহাম্মদ রাজীশ ইমরান প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন থানা কমান্ডের নেতৃবৃন্দ, সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পেছনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান চির স্মরণীয়। তাঁদের সুরক্ষা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা বেঁচে না থাকলে আমাদের নতুন প্রজন্ম মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানবে না। বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাঙ্গালী জাতির গর্ব।
অতচ মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস মুছে ফেলতে এসব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করতে চাই একটি চক্র। ইতিহাস মুছে ফেলার উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী খুনি জিয়া-মোস্তাকের নেতৃত্বে সামরিক বাহিনী, সিভিল সার্ভিস ও অন্যান্য স্থানে বেছে বেছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছে। তারা সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতা চায়নি বরং মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে হত্যা করেছে।
তবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতার শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে যতদিন দেশ থাকবে ততদিন স্বাধীন বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকাও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি জাগরিত হয়ে থাকবে।
করোনা পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে রয়েছেন বলেই তাঁরা সুরক্ষিত রয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য আলাদাভাবে কোভিড-১৯ পরীক্ষা ও ভ্যাকসিন প্রদান সত্যিই প্রশংসনীয়।
আগামীতে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে আরো শক্তিশালী করতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন বলেই স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। তাই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
ডিখ/সৃষ্টি