ওসি প্রদীপ-চুমকির দুর্নীতি মামলায় তিন জনের সাক্ষ্য

ওসি প্রদীপ-চুমকি-দুর্নীতি মামলা-সাক্ষ্য

আইন-আদালতের খবর।। অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাশ এবং তার স্ত্রী চুমকি কারনের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতি মামলায় তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার এ সাক্ষ্য নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুনশি আবদুল মজিদ সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। আগামী ৭ এপ্রিল মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।

সাক্ষ্যদাতারা হলেন, চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-১ এর উপ-কর কমিশনার হারেছ আহমেদ, অফিস সহকারী মো. শওকত আলী ও কর অঞ্চল-৩ এর উচ্চমান সহকারী মো. আবুল কালাম।

এর আগে কড়া নিরাপত্তায় প্রদীপ দাশকে চট্টগ্রাম আদালতে নিয়ে আসা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক।

তিনি জানান, আজ প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় সাক্ষ্যের দিন ধার্য ছিল। সে অনুযায়ী তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ হবে ৭ এপ্রিল।

এ মামলায় প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রী চুমকি দুজনই আসামি হলেও অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে প্রদীপ হাইকোর্টে আবেদন করেন। তাই ১৭ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের শুরুর দিন থেকে শুধু পলাতক চুমকির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।

সেদিন মামলার বাদী দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন মামলায় সাক্ষ্য দেন। এ নিয়ে এ মামলায় চারজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আসামিপক্ষ থেকে প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছিল। আদালত তাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।

এরপরই আজ আবার তিনজন সাক্ষীর রিকল সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। ইনকাম ট্যাক্সের তিনজন কর্মকর্তা আজ আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

জানা যায়, ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে মামলা করেন ৷

মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৬ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন। প্রদীপ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকলেও পলাতক রয়েছেন তার স্ত্রী চুমকি। একই বছরের ১৫ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগ গঠন হয়।

প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগপত্রে অবৈধ আয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটায় ছয়তলা বাড়ি ও পাঁচলাইশ থানার ষোলশহরের একটি বাড়ি, একটি ব্যক্তিগত গাড়ি, একটি মাইক্রোবাস, ৪৫ ভরি সোনা, কক্সবাজারে চুমকির নামে একটি ফ্ল্যাট।

বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে প্রদীপ দম্পতির ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হদিস মেলে দুদকের অনুসন্ধানে। যার মধ্যে বৈধ আয় থেকে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকার সম্পদ পায় দুদক।

বাকি ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। চুমকি নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী বলে আয়কর নথিতে উল্লেখ করলেও তার সমর্থনে প্রমাণ দিতে পারেননি।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় একই বছরের ৬ আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন প্রদীপ। সিনহা হত্যা মামলায় প্রদীপকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

ডিখ/প্রিন্স