মণ্ডপে কোরআন রেখেছিলেন ইকবাল, গ্রেফতার হলেই বেরিয়ে আসবে মূল ঘটনা

কুমিল্লা-পূজামণ্ডপে-কোরআন

দেশের খবর,দেশজুড়ে।। কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখা ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, শনাক্ত ওই ব্যক্তির নাম ইকবাল হোসেন।

তার বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছর হবে। তার বাবার নাম নুর আহমেদ আলম। বাড়ি কুমিল্লার সুজানগরে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে পুলিশ বলছে, ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারলেই বেরিয়ে আসবে মূল ঘটনা।

রাত আড়াইটা থেকে ভোর সাড়ে ৬টার মধ্যে কুমিল্লার পূজামণ্ডপে কোরআন রাখা হয়। সে সময়ই সরিয়ে নেওয়া হয় হনুমানের হাতে থাকা গদা। গদা নিয়ে চলে যাওয়ার একটি সিসিটিভি ফুজে সংগ্রহ করেছে পুলিশ।

ফুটেজে দেখা গেছে, রাত দুইটা ১০ মিনিট। দারোগাবাড়ির মসজিদ থেকে কিছু একটা হাতে নিয়ে বের হচ্ছেন এক যুবক। তার গতিবিধি সন্দেহজনক।

এর এক ঘণ্টা ২ মিনিট পর আরেকটা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কুমিল্লার নানুয়াদীঘি অস্থায়ী মণ্ডপের উত্তর-পূর্বদিকের রাস্তায় ঘোরাফেরা করছেন ওই ব্যক্তি। তার কাঁধে ছিল হনুমানের হাতে থাকা গদা। পুলিশ, পূজামণ্ডপ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাত আড়াইটা থেকে ভোর সাড়ে ৬টার মধ্যে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক ঘটনাটি ঘটে।

ফুটেজে থাকা ওই ব্যক্তির পরিচয় এরই মধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে। তাকে ধরতে চলছে সর্বোচ্চ চেষ্টা। পুলিশ বলছে, তাকে গ্রেপ্তার করা গেলেই বেরিয়ে আসবে সাম্প্রদায়িক উসকানির মূল ঘটনা। তবে সরাসরি জড়িত আরও দুজন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

বুধবার (২০ অক্টোবর) রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে বলেন, কুমিল্লার ঘটনাটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে সাজানো হয়েছে। সিসি টিভির ফুটেজ দেখেছি।

এতে এক যুবক মসজিদ থেকে কোরআন শরিফ নিয়ে রাস্তার দিকে আসে। কিছুক্ষণ পর দেখলাম তার হাতে কোরআন শরিফ নেই। হনুমান ঠাকুরের গদা হাতে নিয়ে তিনি ঘোরাঘুরি করছেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, ওই ব্যক্তিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ওই যুবক মোবাইল ব্যবহার না করার কারণে তাকে ট্র্যাক করা যাচ্ছিল না। এখন পর্যন্ত তিনি ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করছেন। আমরা তাকে নজরদারিতে রেখেছি। যে কোনো সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, কুমিল্লার পূজা মণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রেখেছিলেন ইকবাল হোসেন (৩৫) নামে এক ব্যক্তি। পুলিশের একাধিক সংস্থার তদন্তে তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইকবাল হোসেনের বাবার নাম নূর আহমেদ আলম। বাড়ি কুমিল্লা নগরের সুজানগর এলাকায়। ইকবালকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ, গত ১৩ অক্টাবর সকালে কুমিল্লা নগরীর নানুয়া দীঘির উত্তরপাড় পূজামণ্ডপে কুরআন অবমাননার অভিযোগে রঘুরামপুর গ্রামের মো. ফয়জ (৪১) ফেসবুক লাইভে এসে ঘটনাটি প্রচার করেন।

দৃশ্যটি লাইভ প্রচার ও মোবাইল ফোনে ধারণ করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে সেদিন রাতেই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একমাত্র আসামি কর মামলা করে।

কুমিল্লার ঘটনায় এ পর্যন্ত জেলার তিনটি থানায় মোট আটটি মামলা হয়েছে। এই আট মামলায় অজ্ঞাত অন্তত ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আট মামলায় পুলিশ ও র‌্যাব ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।

ডিখ/প্রিন্স