যেকোন মূল্যে অকৃষি আগ্রাসন থেকে দেশের কৃষি জমি বাঁচাতে হবে-সুজন

যেকোন মূল্যে অকৃষি আগ্রাসন থেকে দেশের কৃষি জমি বাঁচাতে হবে-সুজন

দেশের খবর কৃষি : বাণিজ্যিক অকৃষি আগ্রাসন থেকে দেশের কৃষি জমিকে রক্ষা করতে হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।

আজ শনিবার (২২ মে) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিমত প্রকাশ করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুজন।

এ সময় তিনি বলেন, প্রতি বছর জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ব্যবসায়িক স্থাপনা, নগরায়ন, কারখানা প্রতিষ্ঠা, আবাসিক প্রকল্প তৈরীসহ উন্নয়ন কর্মকান্ডের নামে কৃষিজমি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাচ্ছে।

আমাদের মনে রাখতে হবে কৃষিই হচ্ছে আমাদের প্রাণ। জলবায়ু পরিবর্তন, বিরূপ আবহাওয়া, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, বন্যা, খরা, প্রাকৃতিক সব বাঁধা পেরিয়ে কৃষিই বাংলাদেশের অন্যতম চালিকাশক্তি।

বিশ্বকে তাক লাগিয়ে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। তাই যে কোন মূল্যে কৃষিজমিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

আবাসন, ইটের ভাটা, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, নগরায়নের নামে কৃষি জমিকে গ্রাস করা হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান এসব ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা উন্নয়নের বিরুদ্ধে নই, আমরা পরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়নের পক্ষে এবং তা হবে হবে অবশ্যই উর্বর কৃষি জমিকে রক্ষার মাধ্যমে।

সুজন বলেন, ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন কৃষি জমিকে কোন অবস্থাতেই বাণিজ্যিক কিংবা শিল্পায়ন খাতে রূপান্তরিত করা যাবে না। তাই কৃষি জমি রক্ষায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

এখন থেকেই আমাদের কৃষিজমিকে রক্ষার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে কৃষি মন্ত্রণালয়কেই সবচেয়ে বেশি উদ্যোগী হতে হবে।

তিনি আরো বলেন বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলার প্রাকৃতিক শস্য ভান্ডার খ্যাত সীতাকুন্ড, মিরসরাই, পটিয়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়ার বিশাল কৃষি জমি ক্রমান্বয়ে বাণিজ্যিকরণের নামে গ্রাস করে ফেলা হচ্ছে।

এতে করে ঐসব এলাকার উৎপাদিত সুস্বাদু শাক সবজি তরিতরকারি থেকে বঞ্চিত হবে আমাদের আগামী প্রজন্ম এবং একসময় এসব কৃষি জমির কথা শুধু বই পুস্তকে সীমাবদ্ধ থাকবে।

তিনি এসব এলাকার পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বিজ্ঞান ভিত্তিক কৃষি কার্যক্রম এবং মৌসুমী আবাদের মাধ্যমে শস্যভান্ডারে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ জানান।

ইতিমধ্যে সীতাকুন্ড মিরসরাই এলাকার অধিকাংশ কৃষি জমি বিভিন্ন শিল্প বাণিজ্য গ্রুপ কৃষকের কাছ থেকে চড়া দামে কিনে নিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে জোর করে কৃষি জমি দখল করার ঘটনাও ঘটছে। এতে করে ঐ এলাকার জনগনের মাঝে উদ্বেগ উৎকন্ঠা ছড়িয়ে পড়ছে।

সুজন বলেন আমাদের দেশের অর্থনীতির অন্যতম খাত হচ্ছে আমাদের কৃষি, আর খাদ্য নিরাপত্তার প্রধান শর্ত হচ্ছে কৃষিজমির সুরক্ষা। সে কারনে কৃষিজমি থেকে কৃষকদের উচ্ছেদ করে তা বাণিজ্যিক ও অকৃষি খাতে ব্যবহারের অপতৎপরতা যেকোনো মূল্যে রোধ করতে হবে।

কৃষি জমি চিহ্নিত করে এর উন্নয়ন এবং সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। কোন অবস্থাতেই কৃষি জমির জন্য সংরক্ষিত স্থানে কোন ধরণের বাণিজ্যিক কিংবা শিল্পস্থাপন করা যাবে না।

প্রয়োজনে জাতীয় সংসদে আইন পাস করে কৃষি জমি রক্ষা করতে হবে। এছাড়া কৃষিজমি রক্ষার্থে কৃষিজমিতে স্থাপনা করার ক্ষেত্রে সিডিএ থেকে নকশা অনুমোদনের পূর্বে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে যেন অনাপত্তি গ্রহণ করা হয় তার ব্যবস্থা গ্রহণ করারও আহবান জানান তিনি।

ডিখ/মুন্না