দেশের খবর,সীতাকুণ্ড।। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের পৃথক দুটি স্থানে মাত্র ১৫ ঘন্টার ব্যবধানে দুই মাছ শিকারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রবিবার রাত ৮টা থেকে আজ সোমবার সকাল ১১টার মধ্যে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, রবিবার (২৫ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার কুমিরা-সন্দ্বীপ ফেরী ঘাটে বড়শী দিয়ে মাছ শিকার করার সময় জোয়ারের স্রোতে তলিয়ে যায় ওই ইউনিয়নের হিঙ্গুরীপাড়া গ্রামের ইসলাম মিস্ত্রি বাড়ির মো. ইসমাইল হোসেনের ছেলে নুর করিম(৩৭)।
অনেক চেষ্টা করেও নুর করিমকে খুজে পাইনি স্বজনরা। পরে ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশের ডুবুরি ও সীতাকুণ্ড থানা পুলিশের একটি টিম স্থানীয়দের সহায়তায় দীর্ঘ ৭ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়েও করিমের কোন খোঁজ পাইনি। সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফিরে যান উদ্ধারকারী টিম।
একই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাগরে ভাটা পড়লে নিহতের পরিবারের লোকজন নুর করিমকে খুঁজতে থাকে। রাত ৮টার দিকে সাগরের বাঁধ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দুরে নুর করিমের মৃত দেহটি খুঁজে পাই স্বজনরা। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো.মোরশেদ নিখোঁজ করিমের মরদেহ উদ্ধারের তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনার পরদিন আরো একজন মাছ শিকারীর মরদেহ উদ্ধারের তথ্য পাওয়া যায়। জানা যায়, সোমবার (২৬ জুলাই) সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী সানসেট পয়েন্ট এলাকার বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমির (বিএমএ) লেকে ভাড়ায় বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যায় মাছ শিখারী আবুল কাশেম (৪৫)।
সকাল ৬ টার দিকে আবুল কাশেম সানসেট পয়েন্ট সংলগ্ন লেকে প্রায় ২শ মিটার দূরত্বে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যায়। সকাল পৌণে ১০ টার সময় তার বড়শির ছিপ টেনে পানিতে ফেলে দেয় মাছ।
মাছে বড়শিটি নিয়ে যায় তার সিট থেকে প্রায় ২৫ মিটার দূরে। পরে বড়শিটি উদ্ধারের জন্য লেকের পানিতে নামেন আবুল কাশেম। সাঁতার কেটে বড়শির কাছাকাছি গিয়ে লেকের গভীর পানিতে ডুব দিয়ে তিনি আর উঠতে পারেনি। পানিতে তলিয়ে যায়।
তখন তার সাথে সিটে থাকা অপর মাছ শিকারী মো. রবিউল আলম, মো.মনিরুল আলম ও মো.ফিরোজ মোবাইল ফোনে বিষয়টি বিএমএ কর্তৃপক্ষকে জানান। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন কর্নেল নিশাদুল ইসলাম খান।
পরে সেনাবাহিনীর ডুবুরী দল ১১টা ২২ মিনিটের সময় কাসেমের মৃতদেহটি লেক থেকে উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌছার পর তাদের হাতে মরদেহটি হস্তান্তর করে সেনাবাহিনী।
জানা গেছে, মৃত আবুল কাশেম ভোলা জেলার মৃত মোখলেসুর রহমানের ছেলে এবং চট্টগ্রামের শেরশাহ্ এলাকার দিদারের ভাড়া বাসায় থাকেন।
ভাটিয়ারি লেল এবং সাগরের কুমিরা ঘাট এলাকা থেকে পৃথক দুজন মাছ শিকারীর মরদেহ উদ্ধারের তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ।
তিনি জানান, পৃথক দুই স্থানে দুই মাছ শিকারীর মৃত্যু হয়েছে। কুমিরার নিহত নুর করিমের লাশ গতকাল রাতেই তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সোমবারে ভাটিয়ারীর লেকে নিহত মাছ শিকারী আবুল কাশেমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পৃথক দুটি ঘটনায় থানায় দুটি অপমৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
ডিখ/প্রিন্স